রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৪

প্রাকৃতিক উপায়ে চুলে প্রোটিন ট্রিটমেন্ট

অনেকে এসএমএস পাঠিয়ে চুলে প্রোটিন ট্রিটমেন্টের কথা জানতে চেয়েছেন। আমি মেঘ সব সময় চেষ্টা করি রূপচর্চাকে সহজভাবে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করতে। কতটুকু পারি জানি না তবে যখন আপনাদের ধন্যবাদ পাই তখন খুব ভালো লাগে। অনেক বক বক করেছি এবার কাজের কথায় আসি। 

আমাদের চুল তৈরি হয়েছে ক্যারোটিন নামক এক প্রকার প্রোটিন দিয়ে। এই ক্যারোটিনের কারণেই চুল সুস্থ ও সবল থাকে। চুলের ইলাস্টিসিটিও ধরে রাখে এই প্রোটিন। প্রোটিন ট্রিটমেন্ট যা চুলের গভীরে পৌঁছে চুলে পুষ্টি জোগায়।
এছাড়াও এই ট্রিটমেন্ট দুর্বল বা ভঙ্গুর
চুলে পুষ্টি জুগিয়ে কয়েক গুন ঝরঝরে ও সতেজ করে। নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে ।

পদ্ধতি :
প্রোটিন ট্রিটমেন্টের বেশ কয়েকটি ধাপ
রয়েছে। প্রথমে নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েল গরম করে নিন। এবার চুলের
গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ভালো করে তেল লাগান। খেয়াল রাখুন প্রতিটি চুলের গোড়ায যেন তেল পৌঁছায়। এবার গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে মাথায় পেঁচিয়ে রাখুন
১০ মিনিট। এতে তেল মাথার ত্বকের
গভীরে প্রবেশ করবে। এরপর চুলে প্রোটিন প্যাক লাগান। ১টি ডিম, আধা কাপ টক দই, ২ টেবিল চামচ মধু আর ২ টেবিল চামচ ভিনেগার মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। মাথার ত্বকে আর চুলে ভালো করে লাগিয়ে ৪০ মিনিট অপেক্ষা করুন। আপনার চুলের উপযোগী শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। তারপর কন্ডিশনার লাগান। হয়ে গেল আপনার চুলের প্রোটিন ট্রিটমেন্ট।

এ ট্রিটমেন্ট মাসে দুবার করুন। চুলের স্বাস্থ্য
দেখে নিজেই অবাক হবেন।





মেঘ

শনিবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৪

রূপচর্চায় পেঁপের ৭টি চমৎকার ব্যবহার

বাংলাদেশের অতি সহজলভ্য একটি ফল হলো পেঁপে। প্রাচীন কাল থেকেই পেঁপে খাদ্য ও রূপ চর্চার উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। প্রাচীন মিশরের সুন্দরী সম্রাজ্ঞীরা কাচা পেঁপে ব্যবহার করতেন ত্বকের মৃতকোষ দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল তুলতে। যুগে যুগে রূপ সচেতন নারীদের রূপচর্চার একটি অন্যতম উপাদান ছিলো পেঁপে। আসুন জেনে নেয়া যাক রূপ চর্চায় পেঁপের দারুণ কিছু ব্যবহার প্রসঙ্গে।

পেঁপেতে আছে ভিটামিন এ এবং এক ধরনের প্রোটিন যা ত্বকের মৃতকোষ দূর করতে সহায়তা করে।

কাঁচা পেপে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে পুরো মুখে নিয়মিত লাগালে ব্রণের উপদ্রব কমে এবং ব্রণের দাগ মিলিয়ে যায়।

পেঁপে বাটা পায়ের ফাটা দূর করে পাকে মসৃণ করতে সহায়তা করে।

পেঁপের খোসা মুখের ত্বকে, হাতে কিংবা পায়ে লাগিয়ে রাখুন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

মুখের ত্বকে নিয়মিত পেঁপের রস লাগালে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে না সহজে।

পেঁপে বাটা ও মধু এক সঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রাখুন। ত্বকের শুষ্কতা চলে যাবে ও ত্বক কোমল হবে।

চুল শ্যাম্পু করার আগে চুলে পেঁপে বাটা বা পেপের রস লাগালে খুশকি সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে ।

মেঘ

পার্লারে নয়, কম খরচে ঘরেই সেরে নিন হারবাল ফেসিয়াল

ত্বকের উজ্জলতা ও মসৃণতা ফিরিয়ে আনতে ফেসিয়াল অনেক বেশি উপকারী। ফেসিয়াল করলে ত্বক অনেক সুন্দর থাকে, তারুণ্য ধরে রাখা যায় অনেকদিন। এছাড়া ত্বকের নানান ধরনের সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। অনেকেই পার্লারে ফেসিয়াল করিয়ে থাকেন। ইদানিং ছেলেরাও ফেসিয়াল করার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এখন অনেক ছেলেদের সেলুনেও করানো হয় ফেসিয়াল।

কিন্তু যদি ঘরেই বসে করে নিতে পারেন ফেসিয়াল তবে কেমন হয়? আজকে আপনাদের জন্য রইল ঘরে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে ফেসিয়াল করার পদ্ধতি। সুস্থ ও সুন্দর ত্বকের জন্য ঘরেই সেরে ফেলুন ফেসিয়াল। অবশ্যই পার্লারের তুলনায় মাত্র চার ভাগের একভাগ খরচে।

১ম ধাপ- ত্বক পরিস্কার করুন
প্রথমেই ত্বক পরিষ্কার করে নিন ভালো করে। কোনো সাবান বা ফেস ওয়াস দিয়ে নয়। পানির ঝাপটা দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। এরপর এক টুকরো টমেটো ত্বকে ঘষে নিয়ে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের উপরভাগের ময়লা দূর হবে।

২য় ধাপ- ত্বক স্ক্রাব করুন
প্রাকৃতিকভাবে ত্বকের স্ক্রাবার তৈরি করে স্ক্রাব করে নিন। একটি বাটিতে আধ কাপ নারিকেল তেল নিয়ে এতে ২ টেবিল চামচ চিনি ও ১ টেবিল চামচ লেবুর রস দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এরপর এই মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে আঙ্গুলে ডগা দিয়ে হালকা করে ম্যাসাজ করে নিন ১০ মিনিট। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ভালো করে।

৩য় ধাপ- ত্বকে লাগান ফেইস প্যাক
ত্বকে ঘরে তৈরি একটি ফেইস প্যাক লাগিয়ে ফেলুন। একটি বাটিতে একটি পাকা কলা নিয়ে কাঁটা চামচ দিয়ে পিষে নিন। এতে একটি গোটা টমেটোর রস চিপে দিন। এরপর এতে যোগ করুন ১ চা চামচ অলিভ অয়েল। ভালো করে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এটা মুখে লাগিয়ে রাখুন ১০-১৫ মিনিট। এই সময়ে চোখে শসার কুচি দিয়ে শুয়ে থাকতে পারেন। এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে হালকা ঘষে তুলে ফেলুন। ও মুখ ভালো করে ধুয়ে মুছে ফেলুন।

৪র্থ ধাপ- ত্বকে লাগান টোনার
মুখ মুছে ফেলে ত্বকে টোনার লাগান। এটাও প্রাকৃতিক উপাদান দিয়েই করে ফেলুন। কাঁচা দুধে একটি তুলোর বল ডুবিয়ে নিয়ে ত্বকে ঘষুন। ত্বক পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। এবং ত্বক মুছে ফেলুন।

৫ম ধাপ- ত্বকে ময়েসচারাইজার ম্যাসাজ করুন
এই ধাপে একটি ভালো ময়েসচারাইজার ব্যবহার করতে হবে। প্রাকৃতিক সবচেয়ে ভালো ময়েসচারাইজার হচ্ছে অলিভ অয়েল এবং বাটার। ১ চা চামচ অলিভ অয়েল কিংবা বাটার হাতে নিয়ে ১০ মিনিট মুখে ভালো করে ম্যাসাজ করুন। ব্যস হয়ে গেল আপনার ফেসিয়াল করা। মাসে বেশ কয়েক বার করতে পারেন এই ফেসিয়াল। কারন এতে ত্বকে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হবে না। বরং ত্বক থাকবে সুন্দর ও স্বাস্থ্য উজ্জ্বল।

মেঘ

শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৪

মাত্র দুই সপ্তাহে ত্বকের রঙ উজ্জ্বল করবে অ্যালোভেরা ফেসপ্যাক

ত্বকের সুরক্ষা ও ত্বকের নানান ধরণের সমস্যা সমাধানের অন্যতম কার্যকরী একটি উপাদান হচ্ছে অ্যালোভেরা। অনেক প্রাচীনকাল থেকেই রূপচর্চায় পাকাপোক্তভাবে স্থান করে নিয়েছে অ্যালোভেরা। অ্যালোভেরা পাতার জেল রুক্ষ, শুষ্ক, তৈলাক্ত সকল ধরনের ত্বকের সুরক্ষায় কাজ করে। তাই আজকে আপনাদের ত্বকের সমস্যা সমাধানে রইল অ্যালোভেরা জেলের তৈরি কিছু ফেস প্যাক।

ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে অ্যালোভেরা ও হলুদের ফেইসপ্যাক
একটু উজ্জ্বল ত্বক পেতে কার না মন চায়। নিজের ত্বকের বর্ণকে একটু উজ্জ্বলতা দিতে অনেকেই অনেক কিছু করে থাকেন। এই ফেসপ্যাকটি ব্যবহার করে দেখুন। উপকার পাবেন। মাত্র দুই সপ্তাহের নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকে ছড়িয়ে যাবে অন্যরকম জেল্লা। রোদে পোড়া দাগ মুছে যাবে, আপনার ত্বকের প্রাকৃতিক রঙটি হয়ে উঠবে উজ্জ্বল।

পদ্ধতিঃ
এই ফেস প্যাকটি তৈরি করতে লাগবে অ্যালোভেরা জেল, ১ চিমটি হলুদ গুড়ো, ১ চা চমচ মধু, ১ চা চামচ দুধ ও কয়েক ফোঁটা গোলাপ জল। প্রথমে মধু, হলুদ গুঁড়ো, দুধ ও গোলাপ জল মিশিয়ে একটি পেস্টের মত তৈরি করুন। এরপর এতে অ্যালোভেরা জেল পিষে কিংবা ব্লেন্ড করে খুব ভালো করে মিশিয়ে দিন। এই মিশ্রণটি মুখে, হাতে, গলায় লাগিয়ে নিন। ২০ মিনিট পরে কুসুম গরম পানিতে ধুয়ে ফেলুন। একটি পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে ত্বক শুষ্ক করুন। সপ্তাহে ২/৩ বার ব্যবহার করুন।

অ্যালোভেরা পাতা থেকে জেল বের করার নিয়মঃ
বাসায় অ্যালোভেরা পাতা থেকে খুব সহজেই জেল বের করে নিতে পারেন। প্রতিবার তাজা পাতা ব্যবহার করলে ফলাফল বেশি পাওয়া যাবে কিন্তু প্রয়োজনে এটা সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন পরবর্তীতে ব্যবহারের জন্য।

-একটি অ্যালোভেরা পাতা নিয়ে এর গোড়ার দিকের অংশ কেটে নিন। এরপর কাটা অংশটি নিচের দিকে ধরে রাখুন।
-এতে করে পাতা থেকে হলদেটে একটি রস বের হবে। এই রসটি পুরোপুরি বের না হওয়া পর্যন্ত এভাবেই রাখুন পাতাটি। এই হলদেটে রসটি ফেলে দিন।
-হলদেটে রস পড়া বন্ধ হলে পাতাটি ভালো করে ধুয়ে নিন। এরপর পাতার দুইদিকের কাঁটা ভরা অংশ কেটে ফেলে দিন।
-কাঁটা ফেলে দেবার পর পাতার সবুজ অংশ চেঁছে ফেলে দিন ও ভেতরের স্বচ্ছ জেলের মত অংশ সংরক্ষণ করুন। এটাই অ্যালোভেরা জেল, যা আপনি ফেসপ্যাকে ব্যবহার করতে পারবেন।

মেঘ


বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৪

সমস্যা অতিরিক্ত রুক্ষ চুলের? পার্লারে নয়, সমাধান হোক ঘরেই!

সুন্দর স্বাস্থ্যোজ্জ্বল, ঝলমলে চুল সবারই কাম্য। কিন্তু বিরূপ আবহাওয়া, অতিরিক্ত কেমিকেল সমৃদ্ধ শ্যাম্পুর ব্যবহার, নিত্যনতুন চুলের স্টাইল পরিবর্তন, চুলে কালার করা এইসব মিলিয়ে দিন দিন চুল হয়ে পড়ে রুক্ষ ও খসখসে। চুলের উজ্জ্বলতা ও মসৃণতা শেষ হয়ে যায় একেবারেই। অনেকেই এই ধরণের অতিরিক্ত রুক্ষ চুল থেকে রেহাই পেতে শরণাপন্ন হন ডাক্তারের কেউ যান পার্লারে। আবার অনেকেই রঙ-চঙে বিজ্ঞাপনের পাল্লায় পড়ে ব্যবহার করেন নামি দামী ব্র্যান্ডের হেয়ার প্রোডাক্ট। কিন্তু এত ঝামেলায় না গিয়ে বাসায় বসে একটু সময় বের করেই আপনি চুলের রুক্ষতা দূর করতে পারেন। তাও আবার সামান্য ঘরোয়া জিনিষপত্র দিয়েই। কি, বিশ্বাস হচ্ছে না? তবে চলুন দেখে নেই চুলকে রেশমের মত মোলায়েম করে তোলার সহজ একটি হেয়ার মাস্ক।

অ্যালোভেরা হেয়ার মাস্ক
অ্যালোভেরা খুব ভালো একটি ময়েসচারাইজার। যা শুধুমাত্র ত্বকের শুষ্কতা ও রুক্ষতাই নয়, দূর করে চুলের রুক্ষতাও। অ্যালোভেরার ব্যবহার চুলের রুক্ষতা দূর করে চুলকে করবে মসৃণ, কোমল ও উজ্জ্বল।
এই মাস্কটি তৈরি করতে আপনার লাগবে ৩/৪ টেবিল চা চামচ অ্যালোভেরা জেল, দেড় টেবিল চামচ নারকেল তেল ও ৩ টেবিল চামচ টক দই। চুলের ঘনত্ব ও লম্বা অনুযায়ী পরিমাণ কম বা বেশি হতে পারে।
একটি পাত্রে সকল উপাদান একসাথে নিয়ে খুব ভালো করে মিশিয়ে নিন। এরপর এই মিশ্রণটি চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত লাগিয়ে নিন ভালো করে। ২০-৩০ মিনিট চুলে লাগিয়ে রাখুন মিশ্রণটি। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এবং একটি মৃদু শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুল ধুয়ে নিন। প্রথম ব্যবহারেই পার্থক্য বুঝতে পারবেন! সপ্তাহে ৩ বার এই মাস্কটি ব্যবহার করুন ভালো ফলাফল পেতে।

মেঘ


বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৪

সমস্যা যখন চুল পড়া

টাক হওয়ার চিন্তায় নাকি টাক হয়। টাক হওয়ার আরো অনেক কারণ রয়েছে। তবে কারণ যেটাই হোক না কেন, অতিরিক্ত চুলপড়া কিন্তু আসলেই একটি বড় সমস্যা। মাথার চুল পড়া নিয়ে সঠিক জ্ঞানের অভাবে অনেকেই প্রতারণার শিকার হন। চুল পড়া নিয়ে আপনাদের জ্ঞানের পরিধিকে আরো একটু বাড়ানোর প্রয়াস চালানো হয়েছে আজকের লেখায়।

চুলপড়ার স্বাভাবিক ধরন
আপনার আয়ুষ্কাল কত বিধাতা তা নির্দিষ্ট করে না দিলেও মাথার চুলের আয়ুষ্কাল কিন্তু নির্দিষ্ট। স্বাভাবিক পরিবেশে মাথার চুল তিন বছর পর্যন্ত বাচে। তিন বছর আয়ুষ্কাল পূর্ণ হওয়ার পর আস্তে সে চুল ঝরে পড়ে। মাথার চুল ঝরে পড়া কিন্তু পাতা ঝরা বৃক্ষের মতো নয়। মাথার চুল প্রতিদিনই ঝরে পড়ে এবং প্রতিদিন ১০০টি চুল পড়া কিন্তু একেবারেই স্বাভাবিক। বুঝতেই পারছেন বালিশে কিংবা চিরুনির মধ্যে দু-চারটা চুল লেগে থাকলে বিচলিত হওয়ার কিছুই নেই বরং এটাই স্বাভাবিক। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে শতকরা প্রায় দশ ভাগ চুল প্রতিদিন ঝরে পড়ার জন্য রেডি থাকে। যদি কোনো কারণে এ ঝরে পড়ার হার বেড়ে যায় তবেই সেটাকে চুল পড়া রোগ বলা যায়। উল্লেখ্য, প্রতিদিন যে পরিমাণ চুল ঝরে পড়ে সেটা আবার নতুন করে গজিয়ে ওঠে।

চুলপড়ার কারণ
নানা কারণে মাথার চুল পড়তে পারে। কিছু কারণে মাথার সম্পূর্ণ চুল পড়ে যায়। আবার কিছু কারণে শুধু মাথার নির্দিষ্ট অংশের চুল পড়ে।
. বংশগত কারণে অনেকের মাথার চুল পড়ে যায়। সোজা কথায় বংশে কারো টাক থাকলে আপনারও টাক হওয়ার সম্ভাবনা অনেক। এটা একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এ ক্ষেত্রে সাধারণত ২০ বছর বয়স থেকে আস্তে আস্তে চুল পড়া শুরু হয়। মহিলাদেরও বংশগত কারণে চুল পড়তে পারে। তবে তাদের তো আর টাক হয় না। পুরো মাথার প্রায় ৩০ থেকে ৪০ ভাগ চুল পড়ে যায়। আশার কথা হলো মহিলাদের ক্ষেত্রে এ চুল পড়া ৪০-৪৫ বছর বয়সে পিরিয়ড সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হওয়ার পর শুরু হয়।
. তীব্র জ্বরের আক্রমণের পর মাথার চুল পড়ে যেতে পারে। অনেকের মধ্যে অবশ্য একটা ধারণা বদ্ধমূল আছে যে, টাইফয়েড জ্বরের পর চুল পড়ে যায়। এটা খুবই স্বাভাবিক এবং খুব অল্প দিনের মধ্যে চুলের পরিমাণ আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়।
. গর্ভাবস্থায় অনেকের চুল পড়ে যেতে পারে। এতে ভয়ের কিছু নেই। স্বল্প সময়ে আবার নতুন চুল গজিয়ে ওঠে। আশার কথা হলো প্রথম প্রেগনেন্সিতে এমন সমস্যা দেখা দিলেও পরবর্তী প্রেগনেন্সিতে সাধারণত এমন হয় না।
. হঠাৎ করে অনেক ওজন কমে যাওয়া চুলপড়ার অন্যতম কারণ। বিশেষ করে যারা একদম ক্র্যাশ প্রোগ্রাম করে ডায়েটিং করেন এবং দ্রুত ওজন কমান, তাদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। অবশ্য এ ক্ষেত্রেও পরে আবার নতুন করে চুল গজিয়ে ওঠে।
. ক্যানসারের চিকিৎসা বিশেষ করে কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপির পর মাথাসহ সারা দেহের চুল পড়তে পারে। চিকিৎসা শেষে আবার নতুন চুল গজিয়ে ওঠে।
. থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা, লিভারের সমস্যা ইত্যাদি কারণেও মাথার চুল পড়তে পারে।
. কিছু কিছু রোগ আছে যেগুলোতে পুরো মাথার চুল না পড়ে নির্দিষ্ট অংশের চুল পড়ে যায়। যেমন- অটোইমিউন রোগ, অতিরিক্ত টেনশন, ফাংগাল ইনফেকশন ইত্যাদি কারণে মাথার চুল পড়তে পারে।

চুল পড়া রোগে কার কাছে যাবেন
রাস্তাঘাটের সাইনবোর্ড কিংবা পত্রিকার লোভনীয় বিজ্ঞাপন দেখে আকৃষ্ট না হয়ে চুলপড়ার সমাধান পেতে একজন স্কিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। তিনি রোগের ইতিহাস, রক্ত, চুল ইত্যাদির কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ঠিক করবেন আপনার চিকিৎসার সর্বোত্তম পন্থা কি? প্রয়োজনে তিনি অন্য কোনো বিশেষজ্ঞের কাছে রোগীকে রেফার্ড করবেন।

চিকিৎসা
চিকিৎসা করার আগে অবশ্যই কারণ নির্ণয় করতে হবে। অনেক সময় কোনো কারণ খুজে পাওয়া যায় না। তবে নির্দিষ্ট কারণ পাওয়া গেলে সে অনুযায়ী চিকিৎসা করাতে হবে। যদি ফাংগাসের কারণে হয়ে থাকে তবে অ্যান্টিফাংগাল দিতে হবে। যদি অটো ইমিউন রোগে হয়ে থাকে তবে স্টেরয়েড ইনজেকশন দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়। ২% মিনোক্সিডিল (MINOXIDIL) Bswjk]
ব্যবহার করেও আপনি আপনার টাক সমস্যা সমাধান করতে পারেন। এ ওষুধটি শুধু চুল পড়া বন্ধ করে না বরং কিছু নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। ওষুধ দিনে দুবার ব্যবহার করতে হয়। তবে এর প্রধান সমস্যা হলো মাথার সামনের অংশে এটা তুলনামূলক কম কাজ করে। যদিও এ স্থানের টাক পুরুষদের বেশি বিব্রত করে। বর্তমানে এ ওষুধটি বেশি শক্তিসম্পন্ন ৫% হিসেবেও বাজারজাত হচ্ছে। বাজারে ফিনেসটেরাইড (FINASTERIDE) নামে আরো একটি ওষুধ পাওয়া যায়, যেটা মূলত চুল পড়া প্রতিরোধ করে। তাই যার মাথায় এখনো যথেষ্ট চুল আছে তার জন্য এটা ভালো ওষুধ হতে পারে। বয়স্ক মহিলারা এ ওষুধটি ব্যবহার করতে পারলেও গর্ভবতী মায়েদের জন্য এটা নিরাপদ নয়।
বর্তমানে অত্যন্ত সফলভাবে হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে মাথার পেছন থেকে চুল নিয়ে সামনে বসিয়ে দেয়া হয়। অপারেশনের মাধ্যমে টাক অংশের চামড়া ফেলে দিয়ে চুলযুক্ত অংশ জোড়া লাগানোর ঘটনাও এখন বিরল নয়। হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টের পর রোগীকে ফিনেসটেরাইড খেতে দেয়া হয় যাতে নতুন লাগানো চুল ঝরে না পড়ে। কৃত্রিম চুল কিংবা অন্য লোকের চুল টাক মাথায় বপন করেও বর্তমানে টাক সমস্যা সমাধান করা হচ্ছে।

চুল পড়া বন্ধে বিউটি পার্লারে চিকিৎসা নেয়ার চেয়ে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার বেশি কার্যকর। কেননা পার্লারে নেয়া চিকিৎসা পদ্ধতি দ্বারা চুল পড়া সম্পূর্ণ বন্ধ করা সম্ভব নয়। তবে নিচে দেয়া সহজলভ্য কিছু পরামর্শের মাধ্যমে ঘরে বসে চুল পড়া রোধ করা যায়।

১. হালকা গরম তেল ব্যবহার। যে কোন প্রাকৃতিক তেল যেমন-জলপাই, নারিকেল তেল, কেনোলা তেল (বীজ জাতীয় উপাদান দিয়ে তৈরি) হালকা গরম করে নিন। এরপর তেলের সঙ্গে হালকা পানি মিশিয়ে তালুতে ধীরে ধীরে মেসেজ করুন। একঘণ্টা মাথায় রেখে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।

২. প্রাকৃতিক রস ব্যবহার। চুল পড়া রোধে রসুনের রস, পেয়াজ বা আদার রস মাথার তালুতে মাখুন। রাত্রে তা মাথায় দিয়ে ঘুমিয়ে থাকুন। সকালে ভালভাবে পরিষ্কার করে ফেলুন।

৩. মাথা মেসেজ করা। প্রতিদিন ২ থেকে ৩ মিনিট মাথার তালু মেসেজ করলে তা চুলের ফলিকল সক্রিয় রাখে। এর সঙ্গে ল্যাভেন্ডার বা বাদাম জাতীয় তেল মেখে মাথায় দিলে তালুর ফলিকলের সক্রিয়তা বাড়ে।

৪. এন্টিঅক্সিডেন্টের ব্যবহার। মাথার তালুতে হালকা সবুজ চা প্রয়োগ করে একঘণ্টা পর্যন্ত রাখুন। তারপর পানি দিয়ে চুল কিছুক্ষণ কচলান। সবুজ চাতে প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা চুল পড়া বন্ধ করে এবং চুলের বৃদ্ধি ঘটায়।

মেঘ


মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৪

জেনে নিন ব্ল্যাকহেডস দূর করার "ব্যথামুক্ত" পদ্ধতি

নাকের উপরে, নাকের আশেপাশে ও ঠোঁটের নিচে বেশিরভাগ মানুষেরই ব্ল্যাকহেডস বা হোয়াইট হেডস হয়ে থাকে। ব্ল্যাকহেডসের কারণে ত্বক নোংরা, অনুজ্জ্বল ও কালো দেখায়। এছাড়াও ত্বকে ব্ল্যাকহেডস থাকলে ত্বক অমসৃণ থাকে এবং সহজে মেকআপ বসতে চায় না। যাদের ব্ল্যাকহেডস হয় তারা পরিষ্কার করতে রীতিমত হিমসিম খান তা বলাই বাহুল্য। একবার হলে সহজে যেতে চায়না ব্ল্যাকহেডস, পার্লারে গিয়ে পরিষ্কার করালেও কিছুদিন পরেই আবারো ব্ল্যাকহেডসের উপদ্রব শুরু হয়। তাছাড়া বারবার পার্লারে গিয়ে ব্ল্যাকহেডস পরিষ্কার করানোও বেশ খরচের ব্যাপার। আরও খারাপ বিষয়টি হচ্ছে, এই ব্ল্যাকহেডস পরিষ্কার করার ব্যাপারটি বেশ ব্যথা দায়ক।

বেশ সহজেই ঘরেই পরিষ্কার করে ফেলা যায় ব্ল্যাকহেডস। ঘরোয়া ফেস প্যাক ব্যবহার করেই বিচ্ছিরি ব্ল্যাকহেডস থেকে মুক্তি পেতে পারবেন। আসুন জেনে নেয়া যাক ব্ল্যাকহেডস থেকে মুক্তি পাওয়ার ব্যথা বিহীন ঘরোয়া পদ্ধতি।

উপকরণঃ
১টা ডিমের সাদা অংশ
১/২ লেবুর রস
১ চা চামচ মধু

পদ্ধতিঃ

প্রথমে মুখে গরম পানির ভাপ নিন।
শুকনো টাওয়েল দিয়ে আলতো করে মুখ মুছে নিন।
ডিমের সাদা অংশ, লেবুর রস ও মধু একটি বাটিতে ভালো করে মিশিয়ে নিন।
আঙ্গুল দিয়ে পুরো মুখে ম্যাসাজ করে লাগিয়ে নিন ফেস প্যাকটি।
১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন শুকানোর জন্য।
শুকিয়ে গেলে নরম একটি বেবি টুথ ব্রাশ দিয়ে ঘষে ঘষে তুলে ফেলুন। বিশেষ করে আক্রান্ত স্থান গুলো। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। এতে রোমকূপ গুলো বন্ধ হয়ে যাবে।
আলতো করে মুখ মুছে ১ ফোটা অলিভওয়েল লাগিয়ে নিন পুরো মুখে।
সপ্তাহে দুবার করে এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে ব্ল্যাকহেডসের যন্ত্রণা থেকে ত্বক থাকবে মুক্ত, বারবার ফিরেও আসবে না।

মেঘ