বৃহস্পতিবার, ৫ জুন, ২০১৪

স্বাভাবিক ত্বক

ক. এ ধরনের ত্বকে সাধারণত সমস্যা অনেক কম। তাই অনেকে মনে করেন, এ ধরনের ত্বকের আর যত্নের দরকার কি? এমনিতেই ভালো আছে। কিন্তু একটা বয়সের পর ত্বক নিজেকে আর ধরে রাখতে পারে না। তাই এ জাতীয় ত্বকের প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করা উচিত। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মানেই যেমন ধোয়া-মোছা তেমনি ত্বকের পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রেও ধোয়া-মোছাই প্রথম। দিনে-রাতে মিলিয়ে কম করে ৫ বার মুখ স্বাভাবিক পানি দিয়ে ধোবেন। এতে ধুলোবালি লোম কূপের গোড়ায় আটকে থাকতে পারবে না। ত্বক সজীব মনে হবে। সাবান অথবা বেসন ব্যবহার করে মুখমন্ডল পরিষ্কার করতে পারেন। তবে সাবান বেশি না দেয়াই ভালো। প্রাকৃতিক উপাদান, যেমন: বুটের বেসন দিয়ে মুখমন্ডল পরিষ্কার করতে পারেন। সাবানে যাদের এলার্জি তারা অনায়াসেই বেসন ব্যবহার করতে পারেন।


খ. রাতে শোবার আগে হালকা কুসুম গরম পানি নিয়ে বেসন দিয়ে মুখ ধুয়ে নেবেন। পরে মুখ মুছে গ্লিসারিনের সাথে সমপরিমাণ পানি মিশিয়ে মুখে মেখে নিতে পারেন। এতে মুখের ত্বক নরম থাকবে এবং খসখসে হবে না। এছাড়া আপনি কোন স্কিন টনিক বা ফ্রেশনারও লাগাতে পারেন।
গ. সপ্তাহে অন্ততপক্ষে ২/৩ দিন ফেসপ্যাক লাগাবেন। ফেসপ্যাক লাগানোর ১৫/২০ মিনিট পরে মুখমন্ডল ভালো ভাবে স্বাভাবিক ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। এতে মুখের উজ্জ্বলতা বাড়বে।

ঘ. বাইরে থেকে ঘরে ফিরে অবশ্যই মুখমন্ডল ভালো ভাবে ধোবেন যাতে মেক-আপ লেগে না থাকে। বাইরের ধুলোবালি লোমকূপের গোড়ায় যেন আটকে না থাকে। তাহলে ব্রণ হবার ভয় থাকে না।

ঙ. মাঝে মাঝে মুখে গরম পানির ভাপ নিতে পারেন। এতে লোমকূপের গোড়া খুলে গিয়ে তেল-ময়লা জমতে পারবে না এবং ব্রণ হবার আশংকা কমে যাবে।
প্রতি রাতে অবশ্যই খুব ভালো ভাবে মুখ ধুয়ে পরিষ্কার করে ঘুমোবেন। অসুবিধা হলে নিয়মিত ক্রিম লাগাতে পারেন। যে ক্রিম আপনার ত্বকে স্যুট করবে সেটাই ব্যবহার করবেন।

স্বাভাবিক ত্বকের জন্যে কয়েকটি ফেসপ্যাক
এই ফেসপ্যাক থেকে যেকোনো একটি সপ্তাহে ২/৩ দিন ব্যবহার করতে পারেন।


১. কমলা লেবুর খোসা বাটা + অলিভ অয়েল + কাঁচা ডিমের কুসুম। এগুলো একত্রে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে মুখমন্ডলে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে স্বাভাবিক ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলবেন।


২. কয়েকটি চিনা বাদাম ভিজিয়ে বেটে নিন + কয়েক ফোঁটা খাঁটি মধু একত্রে মিশিয়ে মুখে ২০ মিনিট রেখে প্রথমে হালকা গরম পানি ও পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

৩. কমলা লেবুর খোসা বাটা + কয়েক ফোঁটা মধু একত্রে মিলিয়ে মুখে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে প্রথমে হালকা গরম পানি ও পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

৪. কাঁচা ডিমের কুসুম + ১ চামচ বেসন ও দুধের সর একত্রে পেস্টের মতো করে মুখে ১৫/২০ মিনিট রেখে প্রথমে কুসুম গরম পানি, পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

৫. কাঁচা ডিমের কুসুম + ১ চামচ অলিভ অয়েল একত্রে মিশিয়ে মুখে ১৫ মিনিট রেখে স্বাভাবিক ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

৬. কাঁচা ডিমের কুসুম + অলিভ অয়েল ও মধু একত্রে মিশিয়ে মুখে মেখে ১৫-২০ মিনিট রেখে ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

৭. ছোলার ডালের বেসন + মধু একত্রে মিশিয়ে মুখে ১৫/২০ মিনিট রেখে প্রথমে হালকা গরম পানি, পরে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন। এ পদ্ধতি মুখের রং উজ্জ্বল করে এবং ত্বক নরম রাখে।

৮. মশুরের ডাল বাটা বা ডালের বেসন + কাঁচা দুধ + কয়েক ফোঁটা লেবুর রস + কয়েক ফোঁটা মধু একত্রে পেস্টের মতো করে মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রাখুন। তারপর ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

মুখের পরিচর্যায় সবসময় মনে রাখবেন-
১. যে প্যাকটি আপনার ত্বকের সাথে সব চেয়ে মানিয়ে যাবে সেটি ব্যবহার করবেন।
২. প্রতিদিন ৭/৮ ঘণ্টা ঘুমোনো উচিত।
৩. তেল-মশলা, ভাজা-পোড়া খাবার কম খাবেন।
৪. সব্জি, কাঁচা ফলমূল ও সালাদ বেশি পরিমাণে খাবেন।
৫. পানি বেশি করে পান করবেন।
৬. ভিটামিন-সি, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-ডি এবং ভিটামিন-ই যুক্ত খাবার প্রতিদিনই খাবেন। এতে ত্বক ভালো থাকবে।
৭. সপ্তাহে অন্তত দু-দিন প্যাক ব্যবহার করবেন।
৮. প্রতিদিন রাতে ঘুমোবার আগে মুখ হালকা কুসুম গরম পানি, প্রাকৃতিক উপাদান অথবা আপনার পছন্দের সাবান দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে মুছে নিন। পরে ময়েশ্চারাইজিং লোশন দিয়ে ৫ মিনিট হালকাভাবে মুখ ম্যাসাজ করুন।

মেঘ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন