কথায় বলে- সুন্দর মুখের জয় সর্বত্র! কেবল প্রবাদে নয়, বাস্তবিকই কিন্তু তাই।তবে সৌন্দর্য মানে কেবল গায়ের রঙ ফর্শা হওয়া নয়, কিংবা নিখুঁত শরীর আর ঝলমলে সাজসজ্জা নয়। বরং সৌন্দর্য মানে হচ্ছে স্বাস্থ্য উজ্জ্বল এবং সুখী একটি চেহারা। আপনি কালো- ফর্শা, মোটা- চিকন যেমনি হয়ে থাকুন না কেন; যদি আপনার ত্বক হয় সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন – তবেই আপনাকে দেখতে লাগবে সুন্দর। এবং তা নারী পুরুষ সবার ক্ষেত্রেই সমান ভাবে প্রযোজ্য।
পরিচ্ছন্ন ত্বক মানেই সুন্দর ত্বক, এবং তা আপনার ব্যক্তিত্বে অবশ্যই যোগ করে নতুন মাত্রা। নিয়মিত চেহারার চর্চা করলে অচিরেই আপনার ত্বকের ত্রুটি বিচ্যুতিগুলো সংশোধন হতে শুরু করবে, এবং আপনাই পাবেন আগের চাইতে অনেক বেশী সুন্দর একটি চেহারা ও ব্যক্তিত্ব। তবে এই চর্চাটা হতে চাই নিয়ম মাফিক। এবং অতি অবশ্যই সঠিক উপায়ে।
মানুষ হিশাবে আমাদের চেহারার যেমন আলাদা, ভিন্ন যেমন শরীরের রঙ। ঠিক একই ভাবে মানুষ মাত্রই ত্বকের ধরনও ভিন্ন। সকলের ত্বকের ধরন এক হয় না, আবার বয়স ও লিঙ্গ ভেদেও ত্বকের ধরনে আসে পরিবর্তন। তাই চর্চার আগে জেনে নিতে হবে মূলত আপনার ত্বক কি ধরনের। এবং সেটার সাপেক্ষেই ত্বক চর্চার ধরন ও প্রসাধন সামগ্রী ব্যবহার করতে হবে।
আমাদের মুখের ত্বক মূলত ৪ রকমের হয়ে থাকে-
১. স্বাভাবিক ত্বক
২. তৈলাক্ত ত্বক
৩. শুকনো ত্বক
৪. মিশ্র ত্বক
আসুন জেনে নেয়া যাক নিজের ত্বকের ধরন নির্ণয় করার সঠিক পদ্ধতি।
আপনার ত্বক কী ধরনের তা বোঝার জন্যে রাতে ভালো ভাবে মুখ ধুয়ে মুছে ঘুমাতে যাবেন, এবং নিয়মিত ত্বক চর্চার কোনও ক্রিম মা ময়েশ্চারাইজার লাগাবেন না। তাতে আপনার ত্বক অনেক দীর্ঘ সময় নিজের স্বাভাবিক অবস্থায় থাকবে। ফলে প্রকৃতি নির্ধারণ সঠিক হবে। এভাবে রাত যাবার পর সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে আয়নার সামনে দাঁড়ালে নিজেই বুঝে নিতে পারবেন সহজে আপনার ত্বকের ধরন।
যদি দেখেন মুখটা ভীষণ তেলতেলে হয়ে আছে তবে বুঝবেন আপনার মুখ তৈলাক্ত। একটি টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে দেখবেন টিস্যু পেপারটি তেলতেলে হয়ে যায় কিনা। টিস্যুতে তেল উঠে আসলে নিশ্চিত ভাবেই তৈলাক্ত ত্বক।
আর যদি দেখতে পান যে মুখমন্ডলে হালকা তৈলাক্ত ভাব, কিংবা শুধু নাক ও কপাল একটু চকচক করছে। আবার চোখের কোণ খানিকটা শুকনো মনে হয়, বা টিস্যু পেপার দিয়ে মুখ মুছলেও খুব একটা তেল ভাব হয় না- তবে বুঝবেন আপনার ত্বক স্বাভাবিক ধরনের।
আর শুকনো ত্বক দেখা মাত্রই বুঝে যাবেন। এ ত্বকে তেলতেলে ভাব দূরের কথা, লম্বা একটা ঘুম দেবার পরেও নির্জীব আর শুষ্ক দেখাবে। ভয়ের কথা হচ্ছে, এ ধরনের ত্বকে অল্পতেই বলিরেখা পড়ে যাওয়ার আশংকা বেশি।
মিশ্র ত্বকে মুখের বিভিন্ন অংশের ত্বকের প্রকৃতি বিভিন্ন রকম। নাক ও কপাল দেখা গেল তেলতেলে ভাব আবার গাল হতে পারে শুকনো। এ জাতীয় ত্বক হচ্ছে মিশ্র ত্বক। এ ত্বকের যত্নে শুকনো অংশের জন্যে শুকনো ত্বকের বিশেষ পরিচর্যা ও তৈলাক্ত অংশের জন্যে তৈলাক্ত ত্বকের উপযোগী বিশেষ পরিচর্যা গ্রহণ করতে হয়। এ ধরনের ত্বকের পরিচর্যা করা একটু ঝামেলার তো বটেই, তবে ধৈর্য ধরে করলে সুফল পাওয়া যায়।
জেনে নিন আপনার ত্বকের ধরন, এবং চর্চা করুন বুঝে।
মেঘ
শীতকাল মানেই ত্বকের নানা সমস্যা। বিশেষ করে ত্বকের বিভিন্ন জায়গায় পড়ে যায় কালো ছোপ ছোপ দাগ। কনুই এবং হাঁটুতে যে কালচে দাগ পড়ে যায়, তা সহজেই দূর করা যায় ঘরোয়া উপায়ে। কীভাবে? জেনে নিন উপায়টি।দুই টুকরো লেবু নিন। এতে সামান্য লবণ লাগান। তারপর কনুইয়ে ঘষতে থাকুন ১০ থেকে ১৫ মিনিট। একইভাবে হাঁটুতেও ঘষুন। ঘষার সময় করে উঠতে পারছেন না? কোনো সমস্যা নেই! কনুইয়ের নিচে লেবুর খোসা রেখে কিছুক্ষণ বই পড়ে ফেলুন। তারপর ২-৩ মিনিট ঘষে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে দাগ দূর হয়ে যাবে।
মেঘ
সুন্দর,ঘন ও লম্বা চুল সবারই কাম্য। একজন নারীর সুন্দর, লম্বা ও ঘন চুল যে কারো মনে ছাপ ফেলতে বাধ্য। কিন্তু ইদানিং আবহাওয়া ও আরও নানান কারনে চুলকে লম্বা ও ঘন করতে পারেন না অনেকেই, যদিও মনে মনে ঠিকই কামনা করেন। আবার লম্বা ঘন চুল পেতে অনেকেই ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। কিন্তু অনেকেই জানেন না যে তাঁর ঘরেই রয়েছে চুলকে লম্বা ঘন ও সুন্দর করে তোলার ঔষধ। ঘরোয়া পদ্ধতিতে খাবারের মাধ্যমে চুলের যত্ন সেই প্রাচীনকাল থেকেই হয়ে আসছে। মিশরীয়, গ্রীক ও রোমানরা নিজেদের ঘরেই খুঁজে নিতেন চুলের সমস্যার সমাধান। তাই আজকে আপনাদের জন্য রইল ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুলকে লম্বা, ঘন ও স্বাস্থ্যজ্জ্বল করার ৪টি পদ্ধতি ঘরে মজুদ ৪টি খাদ্য উপাদানের মাধ্যমে। জেনে নিন কোন কোন খাবার কী পদ্ধতিতে আপনার চুলকে করবে লম্বা, ঘন ও স্বাস্থ্যউজ্জ্বল।
সবুজ চা (গ্রিন টি)
গ্রিন টির স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে সবাই খুব ভালো করেই জানেন। আজকে জেনে নিন গ্রিন টি ব্যবহারে কি করে স্বাস্থ্যউজ্জ্বল চুল পাওয়া যায়। গ্রিন টির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানসমূহ ত্বকের জন্য যতটা কার্যকরী চুলের জন্য ঠিক ততোটাই উপকারী। গ্রিন টি চুলের আগা ফাটা রোধ করে যার ফলে চুল লম্বা হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। এছাড়াও গ্রিন টি চুল পড়া রোধ ও নতুন চুল গজানোতে সহায়তা করে।
পদ্ধতিঃ
গ্রিন টি কম বেশি সবাই বানাতে জানি। বাজারে গ্রিন টি পাওয়া যায়। প্রথমে গ্রিন টি বানিয়ে নেবেন। অনেকেই গ্রিন টিতে মধু বা চিনি দিয়ে থাকেন। কিন্তু চুলে ব্যবহারের জন্য গ্রিন টি তে চিনি বা মধু দেবেন না। এক কাপ পরিমাণ গ্রিন টি নিয়ে হালকা গরম থাকতেই পুরো চুলে লাগিয়ে নিন। চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগাবেন। ১ ঘণ্টা চুলে লাগিয়ে রাখুন। তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
ডিম
স্বাস্থ্য উজ্জল চুলের জন্য ডিমের ব্যাহারটিও বেশ প্রাচীন। ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন যা চুল পড়া রোধ করে। এছাড়া ডিমে আরও রয়েছে সালফার, জিংক, আয়রন, সেলেনিয়াম, ফসফরাস ও আয়োডিন যা নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে চুলের ঘনত্ব বাড়ায়।
পদ্ধতিঃ
প্রথমে একটি বাটিতে একটি ডিমের সাদা অংশ নিন। এতে ১ চা চামচ অলিভ অয়েল(জলপাই তেল) ও ১ চা চামচ মধু নিন( চুলের দৈর্ঘ্য ও পরিমাণ অনুযায়ী অলিভ অয়েল ও মধুর পরিমাণ বাড়াতে পারেন)। তারপর উপকরণগুলো খুব ভালো করে মেশান। যখন এটি মসৃণ পেস্টের আকার ধারন করবে তখন এত ব্যবহার উপযোগী হবে। মসৃণ পেস্টের মত হয়ে গেলে মাথার ত্বকে আলতো ঘষে মিশ্রণটি লাগিয়ে ফেলুন। ২০ মিনিট পর প্রথমে ঠাণ্ডা পানি ও পরে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত ১ বার এটি ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। ভালো ফল পাবেন।
আলু
আলুর ত্বকের ও অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রের গুণাবলী সম্পর্কে অনেকেই জানলেও আলু চুলের জন্য কতোটা উপকারী তা অনেকেই জানেন না। আলুর হচ্ছে টাকের সমস্যা দূর করার জাদুকরী উপাদান। আলুর ভিটামিন বি৬ টাক পরা রোধে কাজ করে। এছাড়াও আলুর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ম্যাংগানিজ ও ফাইবার যা নতুন চুল গজানো, চুলের অকালপক্বতা রোধ ইত্যাদির জন্য কাজ করে।
পদ্ধতিঃ
একটি মাঝারি আকৃতির আলু ঝুরি করে চিপে এর থেকে রস বের করে নিন। এরপর একটি বাটিতে আলুর রস, একটি ডিমের সাদা অংশ ও ১ চা চামচ মধু খুব ভালো করে মেশান। খুব ভালো করে মিশে গেলে, মিশ্রণটি চুলের গোঁড়ায় আলতো ঘষে লাগিয়ে নিন। এভাবে ২ ঘণ্টা রেখে দিন। ২ ঘণ্টা পর একটি মৃদু শ্যাম্পু দিয়ে চুল ভালো ভাবে ধুয়ে নিন।
পিঁয়াজ
ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুলের বৃদ্ধির সবচাইতে পুরনো ও প্রাচীন পদ্ধতির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পিঁয়াজের ব্যবহার। পিঁয়াজ সালফারের একটি বেশ ভালো উৎস। পিঁয়াজের রসের সালফার মাথার ত্বকের কোলাজেন টিস্যু উৎপাদনে সহায়তা করে। ফলে নতুন চুল গজায়।
পদ্ধতিঃ
একটি লাল পেঁয়াজ নিন। লাল পেঁয়াজে সালফারের পরিমাণ বেশি থাকে। তারপর পেঁয়াজটি কুচি করে কাটুন ও ভালো করে পাটায় থেঁতলে নিন। একটি নরম পাতলা কাপড়ে এই পেঁয়াজ রেখে চিপে রস বের করে নিন। তারপর এই পেঁয়াজের রস সরাসরি মাথার ত্বকে লাগান। ১৫ মিনিট রাখুন। তারপর মৃদু কোন শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২/৩ দিন ব্যবহারে ভালো ফল পাবেন। বাড়তি পাওনা হিসাবে দূর হবে খুশকি ও অন্যান্য সমস্যা।
মেঘ
মাছ ভাজতে গিয়ে অনেককেই বিপদে পড়তে হয়। ফ্রাই প্যানে মাছ দেয়ার সাথে সাথেই তেল ফুটে ছিটিয়ে যায় চারপাশে। গরম তেলের ছিটে পড়ে আপনার পোশাকে, মুখে ও হাতে। ব্যাপারটা ঠিক সমস্যাই নয়, বরং ভয়ানক বিপদজনক। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার আছে একটি সহজ উপায়। আর তার জন্য লাগবে একটুখানি লবণ।
মাছ ভাজতে গিয়ে তেল ছিটে উঠার বিড়ম্বনা এড়ানোর জন্য চুলায় মাছ দিয়েই কিছু লবণ ছিটিয়ে দিন তেলে। তাহলে মাছের তেল ছিটবে না একেবারেই। ঝামেলা ছাড়াই মাছ ভেজে নিতে পারবেন বেশ সহজে।
-মেঘ
যন্ত্রপাতি ছাড়া কি আমাদের একদিন ও চলে? ফ্রিজ ,ব্লেন্ডার মাইক্রো ওভেন, ডিশ ওয়াশার,মিক্সার আরো কত কী! এইসব যন্ত্র যেমন আমাদের খাটুনি কমিয়ে দিয়েছে তেমনি সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলা করেছে সহজ। জীবনে এনেছে গতি।এছাড়াও রয়েছে কাঁচের ,সিরামিকের দামি বাসনকোসন। এসব যন্ত্রপাতি কিংবা তৈজসপত্র বার বার কেনা আমাদের জন্য বেশ ব্যয় সাপেক্ষ। তাই এদের ব্যবহার ও পরিষ্কার করার সময় নিতে হয় কিছু বাড়তি সর্তকতা। এসব কিছু নিয়েই আজকের আয়োজন।
(১) ওভেনের গায়ে উপচে পড়া তরকারির ঝোল, ভাতের মাড়, উপচে পড়া কেকের মিশ্রন ইত্যাদি পড়লে ওখানে দ্রুত লবণ ছিটিয়ে দিন। ওভেন ঠান্ডা হবার পর ভেজা স্পঞ্জ দিয়ে ঘষুন।
(২) চাল ধোয়া পানি না ফেলে দিয়ে সেই পানিতে কয়েক মিনিট গ্লাসগুলো ভিজিয়ে রাখুন। তারপর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে শুকিয়ে দেখুন কতটা ঝকঝকে হয়ে ওঠে।
(৩) চিনা মাটি বা কাঁচের বাসনপত্র থেকে চা বা কফির দাগ তুলতে হলে কাপড়ে বেকিং সোডা দিয়ে ঘষুন।
ঘষার আগে চিনা মাটির পাত্রের নিচে একটা টাওয়েল বা কাপড় দিয়ে ঘষুন, যা কুশন হিসাবে কাজ করবে।
(৪) দা,ছুরি,বাটা-ঘষা অথবা কাটার যন্ত্র থেকে রসুন-পেঁয়াজ-মাংস-মাছের গন্ধ তাড়াতে চান? এইসব গন্ধ দূর করতে চুন বা লেবুর টুকরো দিয়ে ঘষুন। চাইলে বেকিং সোডা লাগিয়ে হালকাভাবে ঘষে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
(৫) কেটলির তলানির দাগ তুলতে সমপরিমাণ পানি ও ভিনেগার নিয়ে ফুটিয়ে সারারাত রেখে পরদিন ধুয়ে ফেলুন।
(৬) ব্লেন্ডারে হালকা গরম পানি দিয়ে এক ফোঁটা তরল ডিটারজেন্ট দিয়ে কয়েক সেকেন্ডের জন্য ব্লেন্ডারটি চালু করুন। ঢাকনা খুলে ঘষে পানি ফেলে শুকিয়ে নিন।
(৭) নন-স্টিক পাত্র বেশি ঘষাঘষি করলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কোনো কারণে এগুলোর গায়ে খাদ্যদ্রব্য আটকে গেলে গরম পানি ঢালুন। তাও না উঠলে অল্প পানিতে ভিনেগার ও বেকিং সোডা গুলিয়ে ঐ পাত্রটি গরম করুন। দাগ চলে গেলে সামান্য কুকিং অয়েল পাত্রে লাগিয়ে হালকা গরম করুন।
(৮) শুকনো মরিচ গ্রাইন্ডিং মেশিনে গুড়ো করার আগে ঠান্ডা করে নিন। এতে মরিচ গুঁড়ো করা হবে দ্রুত ও সহজ।
(৯) ফ্রিজের মধ্যে সব খাবার ঢেকে রাখবেন। এতে একটি স্বাদ ও গন্ধ অন্যটির মধ্যে চলে যাবার সম্ভাবনা কমে যাবে। ফ্রিজ গন্ধমুক্ত রাখতে এক টুকরো লেবু ফ্রিজে রেখে দিন, তবে কয়েকদিন পর পর লেবুর টুকরোটি পাল্টাতে ভুলবেন না। ফ্রিজে বাজে গন্ধ হবে না, থাকবে নতুনের মতই ফ্রেশ।
মেঘ
শীতকালে আমাদের সবার ত্বকই সাধারণত শুষ্কএবং মলিন হয়ে পড়ে। এমনকি দেখা যায়সারা বছর যাদের ত্বক তৈলাক্ত থাকে শীতকাল
আসলেই তা হয়ে পড়ে শুষ্ক এবং রুক্ষ। তাই এসময়
চাই ত্বকের ঠিকমতো যত্ন নেয়া। ত্বক যাতে সব
সময় ময়েশ্চারাইজড থাকে সেদিকে খেয়াল
রাখতে হবে। তাই আজ তেমনই কিছু ফেইস মাস্ক
দেয়া হল যা ত্বকের শুষ্কতা দূর করে ত্বকের
আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। আপনার
রূপচর্চার রুটিনে এই ফেইস প্যাক গুলো যোগ
করে শীতকালে সুরক্ষিত রাখুন নিজের ত্বককে।
১। কলার ফেইস প্যাকঃ
- একটি পাকা কলা নিন।
-এতে এক টেবিল চামচ মধু যোগ করুন।
- এর সাথে এক চা চামচ অলিভ অয়েল দিন।
সব উপকরণ একসাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।
এবার মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। মধু মুখের ময়েশ্চার ধরে রাখতে সাহায্য করে, অলিভ অয়েল ত্বকের
সিবাম প্রোডাকশন নিয়ন্ত্রণ করে ত্বকের কোমলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
২। মিল্ক ফেইস প্যাকঃ
- একটি বাটিতে এক চা চামচ দুধ নিন।
- এক চা চামচ আমনড পেস্ট করে এর সাথে মেশান।
- এক টেবিল চামচ মধু যোগ করুন।
- এর সাথে ১ চা চামচ এলোভেরা জেল নিন।
এবার সব উপকরণ একসাথে মিশিয়ে পেস্ট
তৈরি করুন।
মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রাখুন।এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
এই মাস্কটি ত্বকের মৃত কোষ দূর
করে ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার করে।
এছাড়াও এটি ত্বকের শুষ্কতা কমিয়ে ময়েশ্চার
বজায় রাখে এবং চেহারায় উজ্জ্বল ভাব নিয়ে আসে।
৩। কোকো ফেইস প্যাকঃ
- একটি বাটিতে আধা চা চামচ কোকো পাউডার
নিন।
- এর সাথে আধা চা চামচ মধু যোগ করুন।
- এক চা চামচ বেসন যোগ করুন।
সবকিছু একসাথে ভালো মতো মিশিয়ে নিন।
এই প্যাকটি মুখে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট
রাখুন। এরপর মুখ ধুয়ে ফেলুন।
কোকোতে রয়েছে এন্টি অক্সিডেন্ট
এবং ক্লিনজিং প্রোপার্টিজ।
এটি ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ পড়তে দেয় না। আর
বেসন ত্বক টানটান করে এবং ত্বকের নিস্তেজ
ভাব দূর করে ত্বকে আনে লাবন্যের ছোঁয়া।
৪। শশার ফেইস প্যাকঃ
-একটি শশা কেটে পেস্ট করে নিন। এবার এর
সাথে এক টেবিল চামচ চিনি যোগ করে ১০-১৫
মিনিটের জন্য ফ্রিজে রেখে দিন। ফ্রিজ
থেকে বের করে মুখে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট
রাখুন। এরপর মুখ ধুয়ে ফেলুন। মুখ ধোওয়ায় সময়
একটু পানি দিয়ে প্রথমে হালকা করে ঘষবেন
যাতে চিনি স্ক্রাবের কাজ করে।
শশা মুখের দাগ দূর করতে বেশ কার্যকর। এছাড়াও
শশা মুখের ত্বক মসৃণ করে এবং মুখের ক্লান্তি ভাব দূর করে। আর চিনি স্ক্রাব
হিসিবে খুব ভালো একটি প্রাকৃতিক উপাদান।
৫। রোজ ফেইস প্যাকঃ
- ২/৩ চা চামচ ওটমিল নিন এবং এর সাথে পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।
- গোলাপ ফুলের পাপড়ি বেটে পেস্ট
করে ওটমিলের সাথে ভালো মত মিক্স করুন।
এই মাস্কটি মুখে লাগিয়ে ২০-২৫ মিনিট
রাখুন। এরপর মুখ ধুয়ে ফেলুন। ওটমিল মুখের
শুস্কতা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি ন্যাচারাল ক্লিনজার হিসেবে খুব
ভালো কাজ করে। আর গোলাপ ফুলের পাপড়িতে রয়েছে এন্টি অক্সিডেন্ট
এবং এন্টি ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টিস
যা ত্বককে ড্যামেজ এবং ব্রণের
সমস্যা থেকে রক্ষা করে।
উপরের মাস্ক গুলো সপ্তাহে ২-৩ দিন ব্যবহারের
চেষ্টা করুন। নিয়মিত ব্যবহারে আপনার ত্বকের
আর্দ্রতা বজায় থাকবে এবং ত্বক হয়ে উঠবে নরম
এবং সুন্দর।
মেঘ
ফুল দিয়ে তৈরি ফেস প্যাক ত্বকের জন্য খুবইভালো। কিছু কিছু ফুলআছে যেগুলোতে মূল্যবান তেল,নিউট্রিয়েণ্ট আছে আর এই তেল আমাদের
ত্বকের নরিশমেণ্টের জন্য জাদুর মত কাজ
করে। তবে ফুলে যাদের
এলার্জি আছে তারা এই
প্যাকগুলো ব্যবহার করবেন না।
কেনা ফুলের চেয়ে আপনার বাগানের
ফুল পেলে সবচেয়ে ভালো হয়। শীত তো প্রায় চলে এলো-এই সিজেনের জন্য
ফ্লাওয়ার ফেস প্যাক খুবই উপযোগী।
শীতে আমাদের অনেকের
ত্বকে কালচে ভাব চলে আসে কিন্তু এই প্যাক গুলো মুখে লাগিয়ে আপনি থাকবেন
দ্বীপ্তিময় ও উজ্জ্বল।
গোলাপ ফুল:
ফুলের রাণী গোলাপ দিয়েও
আপনি করতে পারে রূপচর্চা। শুষ্ক ত্বকের
যেকোনো বয়সী গোলাপের এই প্যাক
লাগাতে পারেন। গোলাপের পাপড়ির
সুগার আর তেল শুষ্ক
ত্বকে আর্দ্রতা জুগিয়ে ত্বককে কুসুম কোমল
করে তোলে।
কয়েকটি গোলাপ ফুলের
পাপড়ি নিন এর সাথে ২ / ৩ চা চামচ
ওটস আর দুধ মিশিয়ে ভালো করে ব্লে-
করে নিন। হয়ে গেল আপনার প্যাক।
এবার লাগানোর পালা। কটন
বলে গোলাপ জল লাগিয়ে পুরো মুখ
মুছে নিন তারপর অপেক্ষা করুন
শুকানো পর্যন্ত। এখন লাগান গোলাপের
ফেস প্যাক। ১০-১৫ মিনিট পর
পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাক
নিয়মিত ব্যবহারে আপনি পেয়ে যাবেন
আপনার কাঙ্খিত উজ্জ্বল গ্লোয়িং স্কিন।
গাঁদা ফুল:
আজকাল গাঁদা ফুল সারা বছরই আমাদের
দেশে পাওয়া যায়। এই ফুল ত্বকের রঙ
হালকা করে সেই সঙ্গে ক্লিন করে।
সপ্তাহে একবার বা দুইবার এই প্যাক
ব্যবহারের ফলে ত্বকের পোরও টাইট হয়।
যদি কারও মুখে পিম্পল
থেকে থাকে গাঁদা ফুল তার অ্যান্টি-
সেপ্টিক, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল
প্রপারটির মাধ্যমে তাও
সারিয়ে তোলে। কয়েকটি ফুলের
পাপড়ির সাথে গুঁড়ো দুধ, টক দই, মধু ও
গ্রেটেড গাজর একসাথে পেস্ট
করে নিন। এই প্যাক ত্বকের ডালনেস দূর
করে। ব্রণে যাদের মুখ জর্জরিত
তারা সপ্তাহে ২ দিন করে এই প্যাক
ব্যবহার করুন।
বেলি ফুল:
বেলি ফুলের মাতাল করা গন্ধে ছোট বড়
আমরা সবাই বিমোহিত হয়ে থাকি।
যাদের শুষ্ক ত্বক তারা এই
প্যাকটি মুখে লাগাবেন সপ্তাহে ২
বার করে। দেখবেন ড্রাইনেস অনেকটাই
কেটে গেছে। ফুলের
বোঁটা থেকে পাপড়ি গুলো আলাদা করুন
, তারপর ফুটন্ত পানিতে ছেড়ে ৩-৫
মিনিট রাখুন।
পানি ছেঁকে নিয়ে দুধের মালাই এর
সাথে পেস্ট করে নিন। মসৃণ ত্বক পাওয়ার
জন্য প্যাকটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট
রাখুন। যাদের সেনসিটিভ ত্বক তারা টক
দই এর সাথে ব্লে- করে মুখে লাগান।
সপ্তাহে ১ বার করাই যথেষ্ট।
শাপলা ফুল:
যদিও এই ফুলটি আমাদের কাছে সহজলভ্য নয়
তবুও একেবারে যে পাওয়াই
যাবে না এমনটিও তো নয়। অনেক
গুলো মিনেরালের
সাথে শাপলাতে আছে লিনোলিক
এসিড, যা ত্বকের রঙ উজ্জ্বল করতে বিশেষ
ভাবে উপযোগী। প্যাকটি বানানোও
খুব সহজ। ফুলের পাপড়ি গুলো খুব
ভালো করে ধুয়ে নিন। তারপর
পানিতে ৪ মিনিট সেদ্ধ
করে নিয়ে পেস্ট করে নিন।
সঙ্গে দিতে পারেন টক দই আর মধু।
চাইলে কিছু না মিশিয়েও শুধু ফুলের
পেস্ট লাগিয়েও উপকার পাবেন।
সেনসিটিভ ত্বক ছাড়া আর সবাই
নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারবেন।
জবা ফুল:
শীতকালে মোটামুটি সবাই ব্রণের
সমস্যায় অতিষ্ঠ থাকি। কেননা ঘন ঘন
ক্রিম ব্যবহারের ফলে ত্বকের লোমকূপ
বন্ধ হয়ে যায় আর ধূলাবালির উপদ্রপ
তো আছেই। কিছু জবা ফুলের পাপড়ির
পেস্ট নিন এর সাথে চালের গুঁড়া,
এসেন্সিয়াল অয়েল যেমন ভিটামিন ই
আর অল্প পানি দিয়ে একটি প্যাক
বানিয়ে নিন। প্যাকটি মুখে লাগান
সব ধরনের টক্সিন, তেল
থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য।
গোলাপ বেলির সংমিশ্রণ:
অনেক সময় নরমাল বা মিশ্র ত্বক হঠাৎ
করে শুষ্ক হয়ে ওঠে এই প্যাকটি তাদের
জন্য বিশেষ ভাবে উপযোগী। এর
একটি কারণ হল এসিডিটি। আপনার
গ্রহণকৃত খাবার বা আবহাওয়াগত
কারণে ত্বক এসিডিক হয়ে যায়। এই সময়
ত্বক শুষ্ক এবং ডাল দেখায়। গোলাপ
বেলির মিশ্রণ ত্বকের এসিডিক নেচার
অনেকখানি কমিয়ে দেয়। এক
মুঠো গোলাপের পাপড়ি আর এক
মুঠো বেলি ফুল নিন, এর সাথে ফ্রেশ
কাঁচা দুধ মিশিয়ে হাত
দিয়ে কচলে নিন। এইবার
প্যাকটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর
ধুয়ে ফেলুন। প্যাকটি দেয়ার পর হাতের
তালুতে একটু গোলাপ জল
নিয়ে মুখে লাগিয়ে নিন।
এইভাবে সপ্তাহে ৩ দিন করে ১ মাস
করুন।
এই ফুলগুলোর ভেতর যেসব প্রাকৃতিক
উপাদান আছে তা আমাদের রূপচর্চার জন্য
আশীর্বাদ স্বরূপ। তাই আর
দেরি না করে উপভোগ করুন ফুলের কুসুম
কুসুম স্পর্শ।
মেঘ
প্রতিদিনের সৌন্দর্য রক্ষার জন্য আমাদের নানা রকম প্রসাধনের সাহায্য নিতেই হয়। হতে পারে সেটা সাবান, ফেসওয়াশ, ক্রিম, পাউডার বা অন্য যেকোনো কিছু! কারণ খুব অল্প মানুষই সুন্দর ত্বক ও চুলের অধিকারী হয়। তার ওপর আছে ধুলা-ময়লা ও দূষণের প্রভাব। দূষণের প্রভাবেই বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় ত্বক ও চুল। এছাড়াও রয়েছে মানসিক চাপ, টেনশন ইত্যাদি।
মানুষের শারীরিক সৌন্দর্য ও অন্তরের সৌন্দর্য অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। বাইরের সৌন্দর্য আমাদের গায়ের রঙে, মাথার চুলে, হাতে-পায়ের নখে। কিন্তু অন্তরের সৌন্দর্য একদম অন্যরকম একটি ব্যাপার। স্বাস্থ্য ও নিত্যদিনের পরিচর্যার ওপর নির্ভর করে সৌন্দর্য।
চুল বা ত্বককে সুন্দর করে তুলতে চাইলে প্রথমেই টেনশন বা মানসিক চাপ একবারে কমিয়ে ফেলতে হবে। প্রয়োজনে ধ্যান বা মেডিটেশন করতে পারেন। মন ভালো রাখার চেষ্টা করুন, হাসিখুশি থাকুন। তেলযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। খাবারের তালিকায় টাটকা ফল, শাক ও সবজি রাখুন বেশি বেশি। প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি খান। নিয়ম মেনে চলাই হলো অন্তর ও বহিঃ সৌন্দর্য রক্ষার চাবিকাঠি।
আয়ুর্বেদিক ত্বকের যত্নের রয়েছে বেশ কয়েকটি ধাপ। এর মধ্যে ক্লিনজিং, ম্যাসাজ, স্ক্রাবিং, টোনিং এবং ময়েশ্চারাইজিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতিদিন নিয়মিত ত্বককে পরিষ্কার রাখা, টোনিং করা ও তার আর্দ্রতা বজায় রাখা জরুরি। দিনে অন্তত চার পাঁচবার মুখে পানির ঝাপটা দি্ন,পানি হল প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার । মুখে সাবান ব্যবহার করবেন না। মুখ ধোয়ার জন্য ব্যবহার করতে পারেন বেসন। কাঁচা দুধের মধ্যে পাউরুটি ভিজিয়ে সেটা দিয়েও মুখ পরিষ্কার করতে পারেন। সাবানের ক্ষারজাতীয় পদার্থ ত্বকের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে ত্বককে করে তোলে শুষ্ক ও প্রাণহীন। সাবান যদি ব্যবহার করতেই হয় তাহলে চন্দনযুক্ত বা নিমযুক হারবাল সাবান ব্যবহার করুন। ত্বক পরিষ্কার করার পর অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার লাগাবেন। এতে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে।
অ্যালোভেরা, মঞ্জিষ্ঠা, চন্দনের গুঁড়া, মুসুর ডালের গুঁড়া মিশিয়ে প্রাকৃতিক ক্লিনিং স্ক্রাব তৈরি করুন। স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বকের জন্য এই স্ক্রাব ব্যবহার করুন। শুধু মুখে নয়, চাইলে সারা শরীরেও ব্যবহার করতে পারেন এই স্ক্রাব। ত্বকের ধরন শুষ্ক হলে স্ক্রাবের সাথে পানির বদলে ব্যবহার করুন দুধ বা দই। তৈলাক্ত ত্বক হলে স্ক্রাবের সাথে মেশান লেবুর রস ও গোলাপজল। যাঁদের ত্বক পরিণত এবং বলিরেখার ছাপ পড়েছে তাঁরা আমন্ড তেল ও পানি মিশিয়ে স্ক্রাব ব্যবহার করুন। স্ক্রাবের ব্যবহারে ত্বকের মৃত কোষ ও ব্ল্যাকহেডস দূর হয়। প্রতিদিন বাইরে থেকে ফিরে আতপ চালের গুঁড়া, মুসুর ডালের গুঁড়া, এক চিমটি কর্পূর আর গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। সারা মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রাখুন। এরপর হালকা করে ঘষে তুলে ফেলুন। ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
ত্বককে পরিষ্কার করার পর প্রয়োজন হয় ম্যাসাজের। মুখে ম্যাসাজের সময় মনে রাখতে হবে কোনোমতেই যেন হাতেয আঙুল নিচের দিকে না নামে। ম্যাসাজে ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। ফলে ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। তবে ভুল ভাবে ম্যাসাজ করলে ত্বকের ক্ষতিও হতে পারে।
ম্যাসাজের জন্য এসেনশিয়াল অয়েল খুবই কার্যকর। সাধারণ ত্বকের জন্য জোজোবা বা আমন্ড অয়েলের সাথে ল্যাভেন্ডার, জেরেনিয়াম বা জেসমিনের তেল মিশিয়ে ম্যাসাজ করতে পারেন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য জোজোবা অথবা সূর্যমুখী তেলের সাথে লেবু ও কয়েক ফোঁটা নিম বা চন্দনের তেল মিশিয়ে ম্যাসাজ করতে পারেন। শুষ্ক ত্বকের জন্য মধু ও জুঁই ফুলের তেল মিশিয়ে ম্যাসাজ করুন। ক্ষতিগ্রস্থ ত্বকের ক্ষেত্রে জোজোবা অয়েলের সাথে ল্যাভেন্ডার অয়েল, নিম তেল, চা গাছের তেল ও লেবুর তেল মিশিয়ে ম্যাসাজ করলে উপকার পাবেন।
ম্যাসাজের পর হারবাল স্টিম নিলে ত্বক হয় সুস্বাস্থ্যের অধিকারী। দুই লিটার গরম পানিতে এক কাপ পরিমাণ উপাদান মিশিয়ে মুখে ভাপ নিন। ভাপ নেবার সময় তোয়ালে দিয়ে মাথা ঢেকে রাখুন। সাধারণ বা মিশ্র ত্বকের জন্য গরম পানিতে চন্দনের গুঁড়া, তেজপাতা ও তুলসী পাতা দিন। তৈলাক্ত ত্বক হলে গরম পানিতে লেবুর খোসা, লবঙ্গ ও ইউক্যালিপটাসের তেল। শুষ্ক ত্বকের জন্য পানিত মিশান লবঙ্গের গুঁড়া, পুদিনা পাতা ও রোজ অয়েল।
স্টিম নেয়ার পর মুখে মাস্ক বা ফেসপ্যাক লাগানো জরুরি। মাস্ক বা বিউটিপ্যাক ত্বকের গভীরে ঢুকে থাকা ময়লা পরিষ্কার করে। ফলে ব্ল্যাকহেডস বা ব্রণের সমস্যা অনেকটাই দূর হয়।
মেঘ
আপনার ঠোঁট কিভাবে গোলাপী করবেন তাই পদ্ধতিটা আপনাদের মাঝে তুলে ধরলাম ।ঠোঁটের চমক বাড়াতে চান। কিছু না এর জন্য আপনাকে কোনো বিশেষ ঝুঁকি নিতে হবে না। যা করবেন : গোলাপের পাপড়ি পিষে এর মধ্যে গ্লিসারিন মিশিয়ে নিন। তা প্রতিদিন ঠোঁটে লাগান। আপনার ঠোঁটের চমক এমনিতেই বেড়ে যাবে। গোলাপের মতো উজ্জ্বল হবে আপনার ঠোঁট। আবার আঙুরের রসও লাগাতে পারেন। এতে ঠোঁট ফাটবে না। ঠোঁট গোলাপি করতে হলে গোলাপের পাপড়ির রসের মধ্যে তুলসী পাতার রস মিশিয়েও লাগাতে পারেন। কয়েক সপ্তাহেই আপনার ঠোঁট গোলাপি হয়ে যাবে।
আর একটি উপায় আছে: ►কাঁচা দুধে তুলা ভিজিয়ে ঠোটে ঘষুন , কালো দাগ তো উঠবেই সাথে ঠোটে গোলাপী ভাব আসবে ।
মেঘ
কোরবানির ঈদের পর তো ফ্রিজ ভরা গরুকিংবা খাসীর মাংস থাকে। কিন্তু উচ্চ রক্ত চাপ,
কোলেস্টেরল আর মুটিয়ে যাওয়ার
ভয়ে শান্তিতে গরুর মাংস খাওয়ার কোনো উপায়ই
নেই। চোখের সামনে টেবিল ভরা মজার মজার মাংস
রান্না চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া কোনো উপায় নেই
আপনার। কিন্তু নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করাও
তো মহা মুশকিল!
যাদের মোটা হয়ে যাওয়ার
প্রবণতা আছে কিংবা এতো চর্বি যুক্ত মাংস
খাওয়া মানা তাঁরা কোরবানির ঈদে পরেন মহা বিপাকে।
ঘরে এতো মাংস কিন্তু চর্বির জ্বালায় খাওয়ার
কোনো উপায় নেই। তাই বলে কি অল্প মাংসও খাবেন
না? যতই নিষেধ থাকুন এই ঈদে অল্প করে হলেও
মাংস খাওয়া হয়। আর তাই মাংস খাওয়া উচিত
অতিরিক্ত চর্বি ফেলে যাতে এই অল্প একটু মাংসই
আপনার স্বাস্থ্যের কোনো ক্ষতি করতে না পারে।
কেননা চর্বি ফেলে দিলে মাংসের
ক্যালোরি নেমে আসে প্রায় অর্ধেকে। আসুন
দেখে নেয়া যাক চর্বি এড়িয়ে কিভাবে মাংস
খাওয়া যায়।
১)রান্না করার আগেই চর্বি ফেলে দিন
মাংস রান্না করার আগে মাংসের
গায়ে লেগে থাকা চর্বির আস্তরণ
আলাদা করে ফেলে দিন। এক্ষেত্রে বেশ
ধারালো ছুরি বা বটির সাহায্যে ধীরে ধীরে সময়
নিয়ে মাংসের টুকরা থেকে ছোট বড় সব
চর্বি চেছে ফেলে দিন। ছুরি বা বটিতে ধার
না থাকলে চর্বি ফেলতে বেশ সমস্যা হবে। তাই
আগে থেকেই ধার করিয়ে নিন এগুলো।
২)ছোট ছোট টুকরা করুন
গরু/ খাসীর মাংস রান্না করার সময় ছোট ছোট
টুকরা করে কাটুন। ছোট ছোট
টুকরা করে কাটলে অল্প খেলেই মনে হয় অনেক
টুকরা খাওয়া হয়ে গেছে। তাই তুলনামূলক ভাবে কম
মাংস খাওয়া হয়। তাছাড়া ছোট ছোট
করে টুকরা করলে রান্না করার সময় ভেতর
থেকে চর্বি গুলো বের হয়ে আসে। তাই মাংস
রান্না করার আগে বড় টুকরা না করে ছোট
করে টুকরা করুন।
৩)গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন
মাংস ছোট করে টুকরা করে নেয়ার পর ধোয়ার পালা।
মাংস ধোয়ার আগে চুলায় কিছুটা পানি গরম করে নিন।
এবার গরম পানি দিয়ে মাংস ধুয়ে নিন। গরম
পানি দিয়ে মাংস ধুলে পানির সাথে বেশ
কিছুটা চর্বি গলে বের হয়ে যায়।
৪)অতিরিক্ত তেল ব্যবহার এড়ান
গরুর মাংসে কিংবা খাসীর মাংসে তো এমনেই অনেক
চর্বি থাকে যেগুলো গলে তেল বের হয়। তাই গরুর
মাংস রান্না করার সময় খুব বেশি তেল ব্যবহার
না করাই ভালো। খুব সামান্য পরিমাণে তেল
দিয়ে রান্না করলেও গরুর মাংস সুস্বাদু হয়। তাই
অতিরিক্ত তেল ব্যবহার না করে পরিমিত
তেলে রান্না করুন। সম্ভব হলে অলিভ অয়েল
বা ভেজিটেবল অয়েল ব্যবহার করুন।
৫)মাংস ঠান্ডা করে চর্বির আস্তরণ ফেলুন
হয়তো খেয়াল করেছেন যে কোরবানির মাংস
রান্না করার পরে ঠান্ডা হয়ে গেলে উপরে বেশ পুরু
একটি হলদে আস্তরণ জমে। এটা চর্বির আস্তরণ।
তাই মাংস রান্না করার পর
ঠাণ্ডা করে রেখে দিলে উপরে যে আস্তরণটি জমে সেটা
চামচ দিয়ে পুরোটা উঠিয়ে ফেলে দিন। বেশ
অনেকটা চর্বি মুক্ত হয়ে যাবে মাংস।
৬)ঝলসানো মাংস খান
গতানুগতিক ধাঁচের মাংস ভুনার চাইতে মাংসের
ঝলসানো কাবাবে চর্বির পরিমাণ কম থাকে। মাংস
পোড়ালে কিংবা ঝলসে নিলে মাংসের
চর্বি গুলো গলে গলে ঝরে যায়। তাই শিক কাবাব
কিংবা বারবিকিউ করা মাংসে চর্বির পরিমাণ
অনেকটাই কম থাকে। ভুনা মাংস এড়িয়ে ঝলসে কাবাব
করে খাওয়ার চেষ্টা করুন। ঝোল বা ভুনা মাংসে ঝোল
খাওয়াটা বাদ দিন।
মনে রাখুন, সপ্তাহে দুদিনের বেশি নয়
যতই চর্বি ফেলে দেয়া হোক, মাংস
থেকে চর্বি কখোনই ১০০% যায় না।
চর্বি ফেলে মাংস খাওয়া কিছুটা নিরাপদ হলেও
প্রতিদিন খাওয়া ঠিক না। তাই সপ্তাহে দুবারের
বেশি খাসী/গরুর মাংস খাবেন না।
মেঘ
শীতকালে ত্বক ময়েশ্চারাইজ করা একান্তজরুরি। পানি দিয়ে মুখ ধোয়ার পর
ভেজা মুখে ময়েশ্চারাইজার লাগান। সারাদিন
ময়েশ্চারাইজার
লাগিয়ে থাকতে চাইলে ব্যবহার করুন ওয়াটার
বাইন্ডিং ময়েশ্চারাইজার।
এটি ঠাণ্ডা বাতাস
থেকে ত্বককে রক্ষা করবে। এ ছাড়া ক্রিমের
মতো ঘন ময়েশ্চারাইজার ত্বকের স্বাভাবিক
তৈলাক্ত ভাব ধরে রাখতে সাহায্য করবে।
শীতকালে ত্বকের ওপর
মরা চামড়া জমতে থাকে। তাই ত্বক নিষ্প্রভ
অনুজ্জ্বল দেখায়। হাত-পায়ের ত্বক রুক্ষ
হয়ে যায়। অনেকের পা ফাটার
সমস্যা দেখা দেয়। এ সময় প্রতিদিন একটু
একটু করে বাড়তি যত্নের প্রয়োজন হয়।
নিয়ম করে একটু বাড়তি যত্ন নিলে শীতেও
ত্বক, চুল, হাত ও পা থাকবে সুন্দর।
মুখের যত্ন
মুখের ত্বক ভীষণ স্পর্শকাতর। তাই যত্ন এ
ক্ষেত্রে বেশি হবে। যে কোনো ধরনের
ত্বকের যত্নে নিয়মিত মধু ও
পাকাপেঁপে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট পর
ধুয়ে ফেললে মুখে আর টানটান
ভাবটা থাকবে না।
সপ্তাহে ২ দিন মুখ
ভিজিয়ে এক্সফলিয়েটিং স্কার্ব ম্যাসাজ
করুন। ২-৩ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ক্রিম বা দুধ
দিয়ে হালকা ম্যাসাজ করুন। ক্রিম বা দুধের
প্রোটিন ত্বক মসৃণ রাখবে।
হাতের যত্ন
পায়ের যত্ন ও হাতের যত্ন একই
পদ্ধতিতে করুন। তবে হাতের যত্নে নরম
ব্রাশ ব্যবহার করতে হবে। স্কার্বিংয়ের সময়
আমন্ড অয়েল ও
চিনি মিশিয়ে স্কার্বিং করে তারপর নরমাল
পানিতে হাত ধুয়ে ভেজা ভেজা থাকা অবস্থায়
ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে শেষ করুন।
পায়ের যত্ন
পা ফাটা শীতকালের নিয়মিত সমস্যা। তাই
প্রতিদিন পা পরিষ্কার
করতে হবে যত্নসহকারে। সপ্তাহে ২ দিন
কুসুম কুসুম গরম পানিতে পা ভিজিয়ে রাখুন ১০
মিনিট। এরপর একটা ঝামাপাথর দিয়ে পায়ের
গোড়ালি পরিষ্কার করুন।
বাথ সল্ট দিয়ে সার্কুলার মুভমেন্টে ম্যাসাজ
করুন ২-৩ মিনিট। এবার নরমাল
পানিতে ধুয়ে এক চামচ মধুতে এক চা-চামচ
অলিভ অয়েল মিশিয়ে ম্যাসাজ করুন।
পরে একটা ভেজা তোয়ালে দিয়ে পা মুছে প্রয়োজন
হলে ময়েশ্চারাইজার লাগান।
চুলের যত্ন
মধু ও অলিভ অয়েল সমপরিমাণে মিশিয়ে ১২
ঘণ্টা রেখে দিন। এরপর এই তেলের মিশ্রণ
চুলের গোড়ায়
ভালো করে লাগিয়ে হালকা ম্যাসাজ
করতে হবে। চাইলে তোয়ালে দিয়ে হট
কমপ্রেস করতে পারেন। এরপর এক
ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করে নিন।
শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনিং করতে ভুলবেন
না। চাইলে এ সময় বাড়তি যত্নের জন্য
হেয়ার সেরাম ব্যবহার করতে পারেন।
ঠোঁটের যত্ন
গ্লিসারিন, কোকো বাটার যুক্ত লিপ বাম
ব্যবহার করুন। রাতে শোয়ার আগে ২
ফোঁটা আমন্ড অয়েল ঠোঁটে ম্যাসাজ
করে নিয়ে ১০ মিনিট পর ভেজা টাওয়াল
দিয়ে মুছে নিয়ে শুয়ে পড়ুন। আপনার ঠোঁট
সারা দিন আর রুক্ষ হবে না।
সতর্কতা
* অনেকক্ষণ ধরে গোসল করবেন না।
* শীতকালে অতিরিক্ত গরম পানিতে গোসল
করলে ত্বক আরও বেশি রুক্ষ হয়ে যায়।
শীতকালে নিয়ম করে এভাবেই একটু নিজের
যত্ন নিয়ে দেখুন শীতের
রুক্ষতা আপনাকে ছুঁতে পারবে না।
মেঘ
বাঙালির রসনাবিলাসের অন্যতম একটি উপাদান হলো আচার। লেবু, মরিচ, বিলেবু, সাতকড়া, বরই, জলপাই, তেঁতুল ইত্যাদি নানা ধরনের আচার বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি ঘরেই তৈরি করা হয়। আচারে স্বাদেও থাকে ভিন্নতা। টক-ঝাল-মিষ্টি হরেক স্বাদের আচার জিভে এনে দেয় জল। আচার তৈরি করার যেমন রয়েছে নানান ঝক্কি, তেমনি এগুলো সংরক্ষণ করারও রয়েছে বেশ হ্যাপা! সাধারণত মৌসুমি ফল দিয়ে এমনভাবে আচার তৈরি করা হয়, যাতে তা সারাবছর খাওয়া যায়। আচার সংরক্ষণে অবলম্বন করা হয় নানান পদ্ধতি। কিন্তু তারপরেও দেখা যাচ্ছে কোনো ভাবে এক ফোঁটা পানির স্পর্শ পেলেও জমতে শুরু করেছে ছত্রাক। একবার ছত্রাক ধরলে তা বাড়তে থাকে দ্রুত। স্বাদ ও গন্ধ নষ্ট করে দ্রুত পচিয়ে ফেলে আচারকে। এখন কী করবেন? ফেলে দেবেন যত্নে গড়া আচার? না, বরং জেনে নিন ছত্রাক ধরা আচারকে কীভাবে আবার করে তুলবেন নতুনের মত।
আচার কাচের বয়ামে সংরক্ষণ করলে ভালো থাকে দীর্ঘদিন। আচার তেলে ডোবানো থাকলে, মাঝে মাঝে রোদে দিলে ভালো থাকবে সারাবছর। আচার ভালো রাখতে চাইলে ফ্রিজেও সংরক্ষণ করতে পারেন। এত কিছুর পরেও যদি আচারে ছত্রাক ধরে যায় তাহলে কী করবেন? এরও রয়েছে সমাধান। টক বা ঝাল আচারে ছত্রাকের আবরণ পড়লে তা তুলে ফেলে দিন। এরপর এর ওপর চিনি ছড়িয়ে দিন। আর মিষ্টি আচারে ছত্রাক পড়লে সেটা সরিয়ে ছড়িয়ে দিন লবণ। এতে আচারে আবার ছত্রাকের আক্রমণ সম্ভাবনা দূর হবে। আপনার সাধের আচার থাকবে দীর্ঘদিন ভালো।
মেঘ